ঝড়ের নাম উমপুন্
আজ নিয়ে তিনদিন হলো --সম্পূর্ণ অন্ধকারে বসবাস করছি , বিদ্যুৎ নেই - ফলে জল নেই; মোবাইলে নেটওয়ার্ক নেই . জীবনে অনেক ঝড় দেখেছি ঝড় এসেছে আবার চলেও গেছে ; আবার অনেক সময় অনেক ঘটনায় মনে হয়েছে যেন ঝড় বয়ে গেলো সেই ঝড় বয়েও গেছে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে কিন্তু গত ২০শে মে ২০২০ ঘটনা একটু অন্যরকম , জীবনে অনেক বার সমুদ্রের পাড়ের পার্শ্ববর্তী হোটেলে ছুটি কাটিয়েছি শুধুমাত্র রাতভর সমুদ্রের গর্জন শুনবো বলে --আজ হঠাৎ মনে হচ্ছে কি অদ্ভুত ভয়াল বিলাসিতা ;হ্যাঁ উপভোগ করেছি ঘুমিয়ে পড়েছি আর সেদিন সমুদ্র থেকে প্রায় কমবেশি ২০০ কিমি দূরে থেকে সমুদ্রের গর্জন শুনলাম ঘরে বসে মনে হয়েছে এক একটা সফেন ঢেউ তীব্র হুঙ্কারে আছড়ে পড়ছে পাড়ে ..কখনো মনে হচ্ছে জানলা দরজায় কেউ সশব্দে ডাকছে --২০ তারিখ রাত আট টার পর থেকে আর কারো সাথেই যোগাযোগ করা যায়নি বাইরের খবর পাওয়ার একমাত্র উপায় সংবাদ পত্র কিন্তু সেখানেও খবরের পরিমান নেহাত ই সীমিত ..চারপাশের পরিস্থিতি খুব ই এলোমেলো তাই মাথায় চিন্তা গুলো ও অগোছালো ভাবে আসছে --
গতকাল রাতে হঠাৎ করে প্রাণ ফিরে এলো ঘরের এককোণে বহুদিন ধরে পরে থাকা টেবিল ল্যাম্প টায় ..সত্যি মূল্যহীন কোনো কিছুই নয় -আসলে সবটাই তো আপেক্ষিক ....
আমার বাড়ি বা আমার আশেপাশের কয়েকটি বাড়ি বাদ দিলে এই পাড়ার বা বালির বাকি অংশের অবস্থা খুব ই সঙ্গীন গাছ ভেঙে বা বিদ্যুতের খুঁটি কোথাও ভেঙে বা কোথাও হেলে চলাচলের পথ অযোগ্য হয়ে উঠেছে ..অন্য সময় হালকা ঝড় বৃষ্টির পর গাছ পালা কেমন প্রাণ ফিরে পায়ে --আজ চিত্র সম্পূর্ণ উল্টো উমপুনের ঝাপটায় সে বড়বেশি ক্লান্ত ক্লিষ্ট -কোনোরকমে দেহ টুকু ধারণ করে যেন বেঁচে আছে--- আধুনিক থেকে অতি আধুনিক এই শব্দ গুলোকে প্রকৃতি আজ উল্লাসে কটাক্ষ করছে -- বাস্তব টুকু বোঝানোর চেষ্টা করছে তার বুকে সদর্পে অস্তিত্ব চালনাকারী উৎকৃষ্ট জীবের উদ্দেশে ---
আর এই নেই রাজ্যে আছে শুধু মানুষের ক্ষোভ - হতাশা ----হিংসার আগুনে ছারখার না হওয়া পর্যন্ত হয়তো এর শেষ নেই ------তবুও স্বপ্নেরা আজ ও বাঁচতে চায় , বিরামহীন চলার মাঝে নিশ্চয়ই আছে নতুন বাঁক,নতুন মোড় আসছে নতুন ভোর..
Comments
Post a Comment